Friday, 2 March 2012

সূচিপত্র


সম্পাদকীয়ঃ-  
ক্ষেপচুরিয়াস ইচ্ছেবাড়ী - আঁতুড়ের জল...  

বিভাগ - ক / কবিতাঃ-

নির্বাচিত কবিতা

সূরজ দাশ । সুচেতা রায় ।। বিজয় আহমেদ ।। জুবিন ঘোষ ।। আপন মামুদ ।। হাসান রনি ।। মহাশ্বেতা আচার্য ।। শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ ।। সোমনাথ দে ।। অশোক দেব ঋষি সৌরিক ।। রোজেন হাসান ।। নির্মাল্য বন্দ্যোপাধ্যায় ।। প্রসেঞ্জিত দত্ত ।। নীলাঞ্জন সাহা ।। বচন নকরেক ।। পার্থ প্রতিম রায় ।। শ্যামল দাষ ।। বাণীব্রত কুন্ডু ।। সুমি সিকন্দর ।। শর্মিষ্ঠা ঘোষ ।। দেবাশীষ রায়চৌধুরি ।। মার্ক অন্তিম ।। সাহারা জিপ্‌সি

পর্বে পর্বে আলেক্ষ্য
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্তের দুটি কবিতা এবং সময় কল্পে যাত্রা জুবিনাতীত

বিভাগ - খ / কবিতার বাইরে নয়ঃ-

টুকরো কথা
শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
অমলেন্দু চন্দ

ম্যানিফেস্টো
অনুপম চট্টোপাধ্যায় (সৌজন্যে অমিত বিশ্বাস)

শিল্পকলা
অমিত বিশ্বাস 

ব্যবস্থাপনায়
ক্ষেপচুরিয়াস
...এবং আপনি 



সম্পাদকীয়


ক্ষেপচুরিয়াস ইচ্ছেবাড়ী - আঁতুড়ের জল ...
অবশেষে সময় হল ক্ষেপচুরিয়াস ইচ্ছেবাড়ীর দ্বিতীয় দফার দেওয়াল লিখনেরতবে কি প্রথমবারের সেই লিখন চিহ্ন মুছে দেওয়া হল?  আদপেই নয়! এক্ষেত্রে আমি শক্তিবাবুর পরবর্তি লাইনগুলি কাউন্টার করছি -
মায়াবী ঐ আলোয় ওড়ে মায়া রঙের ফানুস
যে জন ছিলো গোঁড়ায় তাকে পুঁড়িয়ে মারে মানুষ...
আর যারা সব পথিক শুধু তার পিছনে চলে
মানুষ এসে ছোঁ মারে সেই একমুঠি সম্বলে!
পয়লা লিখনে প্রোথিত হয়েছিল যে ইচ্ছের বীজ, মধ্যের এ কদিনের নীরব অপেক্ষায়, তা নিবিড়ে গড়েছে ভিত মাটির গভীরে। অল্প অল্প করে প্রয়াস জমেছে তাতে, অনাদায়ী তৃষিত কিছু বাষ্প জমেছে... বুঝি এভাবেই ধারণা পায় - অবয়বে চলে আসে আঁতুড়ের জল! বুঝিবা মৃদুলয়ে স্পন্দিত জীবনে নিশ্চিত সবুজের উন্মেষ ঘটেছে...
ক্ষেপচুরিয়াস ইচ্ছেবাড়ী বড় কঠিন মায়ায় বেঁধেছে আমাদের! বড় অকাতর পুড়িয়ে পুড়িয়ে শিখিয়েছে আত্মরতি! বলেছে নিজস্ব হও - ভিন্ন হও - বলেছে উপশমের বৃত্তে ব্যাধীরও ঈর্ষা জোটে অদৃষ্টে কখনো সখনো! আমরাও তাই, আর পাঁচটা বসতের মত, আলাদা রাখিনি কোন লুডোছক গেরস্ত বাগান। বরঞ্চ চৌদিকে আগাছায় অবিদিত, প্রকৃত নিবিড়ে আজ অরণ্য এসেছে। ইচ্ছেবাড়ীর এই বিবিক্ত দালানে আমরাও ডাক দিই ভাতৃত্বের আজ... 
বলি, থাক সৌন্দর্য - পড়ে থাক অপরূপ আপন বৃত্তে আজ উৎসবও থাক। সূর্যোদয় নির্বিশেষে বরং সঙ্ঘ গড়ে উঠুক - রাতের অন্ধকারেও নিশ্চিত খুঁজে নেবো উজ্জীবনের বীজ - সময় আসবে যাবে - অকাতর রয়ে যাবে জীবন সখ্যতা!
আজ ৩০ টি কবিতা এবং সমগোত্রীয় কিছু লেখা তুলে দিলাম শোধনাতীত এই ইচ্ছের দেওয়ালেসবাইকে অনুরোধ করবো, সমৃদ্ধ করুন এসে দেওয়ালে আলেখ্য - অথবা নস্যাৎ করুন, দেয়ালা আমাদের - এই দ্বিতীয় মুরাল!     
                                  -*-

জুবিন ঘোষ


দেবলীনা ও অপূর্ব মাছ
              
মীনরাশি স্নানের শব্দে বাসন ভাঙে
বাটনাবাটা চুল মঙ্গলাদিঘির কবলিত আঁচলা জল
কলকলিয়ে অনাঘ্রাতা ড্রেসিং-আয়নায় ঢেউ স্বভাবে
দ্বিধাবিভক্তময় মাছধরা শাড়ি , তুমি-আমি জাল পাততেই
তোমার গোপন মৈনাকটিতে সেইমাত্র একটা জীবন্ত মাছ
টুপ করে খসে পড়তে দেখি মাছটি খাবি খায়
মাছটি তুলে আনি আসীম পেয়েছি ভেবে
মুড়োয় মুখ দিয়ে হাওয়া দি তাতে , আরও বাতাস আরও ফুলকা আয়ু
বাতাস তাকে নিজের মতো ছেঁড়ে ;
ছিঁড়তে ছিঁড়তে কানামাছি , ল্যাজ ফোলাই বিড়ালির চোখে
ততই মাছ আমায় নিয়ে যায় প্লাবনের মুখে
প্লাবনের মুখে মৎস্য অবতার থাকেন , প্লাবনের মুখে যত সর্বনাশ
হে আল্লা , আপনাকে ঈশ্বরী বলে ভ্রম হয়
সেই ভ্রমে রোজ পয়সা জমাই ঘটে , স্বপ্নে লক্ষ্মীমন্ত
একটা মাছ , অপেক্ষা করে বাজারের থলি
ল্যাজ ফুলিয়ে চেটেপুটে খেয়ে ফেলি বাকি ভাতগুলো
অস্থির হয়ো না দেবলীনা, দেবঘটে জল দাও, ঘটে ভক্তিভৈক্ষ্য কনকচূড় -
ঘটে আস্ত একটা পুকুর পুষেছি সেই ভেবে -
রাখলেই দেখো , পয়সাগুলোয় কেমন অনাবিল আঁশটে গন্ধ থালায়
ভুরভুর কিছু আনন্দমাছ লাফিয়ে জড়িয়ে ধরে তোমায় অপরূপ

প্রতিদিন একটা মাছের চোখ ভাসতে দেখি ডালে
প্রতিদিন সান্তনা দিতে আসে একটা অপূর্ব মাছ   

পার্থ প্রতিম রায়


বিষাদ বিষয়ক কবিতায় বেশি !
 
মেদহীন গুমঘরে এ জীবন কেটে যাচ্ছে বেশ  
বোতলের ভিতর ঘুর্নিজলটার বহিরঙ্গ -সম্পৃক্ত হয়ে
আলোর আশ্চর্য ক্যানভাসে হুল্লোড়
বেঁচে আছি অলৌকিকতার বিষাদকুয়াশার
দিনরাত্রি পেরিয়ে ,কান্নারচিত শরীরের পাক...
সমকামী বিষাদ ইদানীং ফুলমালা হয়ে ভেসে যাচ্ছে ,
তাই ,আবছা হলেও কান্না বিষয়ক 
কবিতায় বেশি! 
 
জানালার পর্দাগুলোর পরিত্যক্ত স্পন্দন
অনর্গল ফ্যাকাসে বৃষ্টির বকবক ,শরীর থেকে
ধীরে ধীরে স্পষ্টতা লোপ পাচ্ছে,মিথ্যাচার স্বপ্নের
উদ্বেগ ,তাই আবছা হলেও বিষাদ বিষয়ক
 কবিতায় বেশি !
 

রোজেন হাসান


দিব্যস্বপ্ন

অসহ্য অবসর নিয়ে তোমাদের জন্য বসে আছি
অবসর অসহ্য, উষ্ণ, শীতল, অবকাশ?
নয় যেন এই হাত হাড়ের মত গাছ হয়ে থাকে
পাতগুলো কুসুম রক্তাভ যেন জ্বলে, যেন জ্বলে?
বুঝি না, কেননা এখন বিপনিবিতান
আমি নেই, আমি এক বডি স্প্রে, ডিশওয়াশ থেকে বেরিয়ে আছি
অসহ্য অবসর নিয়ে তোমাদের জন্য বসে আছি
প্রেম? অপ্রেম?
সব কিনে রেখে দাও
অসহ্য অবসর আমি, আমি বিনোদন তোমাদের
হাড় গাছ কামশীতলতার
বিনোদন নেই আমার, আমি জড়
বিদ্বেষ ঘৃণা আলিঙ্গন, আমি আগন্তুক
রাতে মিছি ঘুমিয়ে পড়ি, ঈশ্বর আর শয়তান আমাকে
ডাকে
যুদ্ধ করি আমি ঈশ্বর, মন্দকে জড়াই কুসুম শীৎকারে
শীৎকারে কুসুম জড়াই শয়তান, তাই মানুষ ও
ছেড়ে চলে যাও
জানি আমি সমাধি, কুকুরের ঘ্রাণ, শ্মশানের মড়াপোড়া
এই নীরব নিঃসঙ্গতা  যাওয়া নেই কোথাও
সিগারেট জ্বালিয়ে আমাকে পান কোরো, আমি ধোয়া
আমি তুলসীর তলে জ্বর নিয়ে বসি
বালিকার কামজ্বর ভুলে যায়, অসহ্য
অসহ্য এই কাম লিঙ্গ নেই আমি আকাশের
পোড়ো ধুলোর সাথে সঙ্গম ক্লান্ত, করেছি নতুন প্রকাশ
পিকাসোর গোয়ের্নিকার,বালিতে যে সমুদ্র সৈকত
বালিতে যে কিশোর নিজেকে শুষে, দেখে সমুদ্র রাতে
দিব্য স্বপ্ন, অভিনেতা, প্রেমকাতর, চিড়িয়াখানা
কোমল ঊরু, ব্যবহৃত যোনি, আমি যেন কিশোর এই
আমি ঘুম যাই তার বুক আমার
আমি সবার, বিরহ, প্রেম, ঘৃণা তিন বছরের
কেন যাবে নীরব পথ ধরে হঠাৎ ?
প্রেম
আমি জানি না আমি জড়
অসহ্য অবসর আমার স্নায়ু মজ্জাতে লেগে আছে



সূরজ দাশ


কথা যখন ফুরিয়ে যায়

কথা যখন ফুরিয়ে যায়
যখন মনে পড়ে না কিছু
তখন আকাশ দেখি আর
গাছেদের নীরবতার কথা ভেবে
নিজেকে আশ্বস্ত করি
 
মনে মনে বলি
মানুষের কাঙালপনা দেখার চেয়ে
গাছই ভালো , দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
আকাশের দিকে হাত বাড়ানো যায়
মেঘেদের সাথে কথা বলা যায় যত খুশি
 
এ সব করেই ভালো থাকি এখন
এ সব ভাবতে ভাবতেই আরও হাজার বছর
ভালো থাকতে চাই , আরও আরও
নৈশব্দের ভেতর ডুবে থেকে ছুঁতে চাই
জীবনের ফুল ফুল সবুজ বিষাদ

অশোক দেব


উপসর্গ
 
শুনেছি জ্যোৎস্নারাতে
একটি গোপন নৌকো ঘাটে ঘাটে ঘোরে
 
বহুকাল এই গ্রামে থেকে আমি দেখিনি
শুধু শুধু নদীর নামে রটিয়েছি অপবাদ
 
আজ মনে হয় সব ঘাটেই রাতে রাতে
মিশে যায় জল
নদী আর নৌকোতে চলে অভিমান